এখন নেশার জগতে নতুন নাম ‘ক্যাটামিন’। গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল, পেথিডিন, ইয়াবার পর ক্যাটামিন যুক্ত হয়েছে নেশার রাজ্যে। মাদক ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা নতুন এই নেশাকে অভিহিত করেছেন ‘রেভ ড্রাগ’ ও ‘ক্লাব ড্রাগ’ হিসেবে।
হেরোইন সদৃশ এই নেশা জাতীয় পাউডার নেশার জগতে নিয়ে এসেছে নতুন আতঙ্ক। বন, জঙ্গল, চিড়িয়াখানায় হিংস্র ও ভয়ানক পশুকে বশে আনা ও চিকিৎসার প্রয়োজনে এই পাউডার ব্যবহার হয়। সিরিঞ্জ গান ব্যবহার করে পশুর শরীরে পুশ করা হয় চেতনানাশক তরল ক্যাটামিন। এতে হিংস্র পশু কিছুক্ষণের জন্য চোখে ঝাপসা দেখে। অল্প সময়ে ঝিমিয়ে পড়ে। শরীর নেতিয়ে পড়লে চলে যায় ঘুমের রাজ্যে।
হিংস্র পশুকে বশ করা এই নেশা ইতিমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাদক গ্রহণকারীদের মাঝে। যে কোন পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হচ্ছে ভয়ঙ্কর এই নেশা জাতীয় দ্রব্য। ক্যাটামিন এখন ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন ডিসকো ও ডিজে পার্টিতে। নেশায় বুঁদ হচ্ছে তরুণসমাজ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তরুণ-তরুণী ও অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েরা খুব দ্রুতই এই নেশার প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ক্যাটামিন বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু কোন নিয়ম না মেনেই বাংলাদেশের রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে তা বিক্রি হচ্ছে । মাদক ব্যবসায়ীরা অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে তা চড়া দামে বিক্রি করছে অভিজাত এলাকাতে।
প্রতি কেজি ক্যাটামিন তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । তবে নেশাগ্রস্তদের কাছে তা বিক্রি হয় পুরিয়া হিসেবে। মাদক ব্যবসায়ীরা প্রতি পুরিয়া ক্যাটামিন বিক্রি করছে একশত থেকে তিনশত টাকা পর্যন্ত। মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নাজমুল হুদা বলেন, ‘ক্যাটামিন একটি ভেটেরিনারি প্রডাক্ট। কুকুর জাতীয় প্রাণী ছাড়া তৃণভোজী ও মাংসাশী পশুদের জটিল অপারেশন, চিকিৎসা বা বশে আনার প্রয়োজনে আমরা এই পাউডার ব্যবহার করি। বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুকসহ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে প্রাণীর ওজন ও ভারসাম্যের ওপর ক্যাটামিন ব্যবহার করতে হয়। ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকাটা জরুরি। পরিমাণে কম-বেশি হলে প্রাণীর জন্য তা হবে ক্ষতিকর। আর মানুষ যদি নেশার জন্য তা ব্যবহার করে হয়তো সাময়িক আনন্দ হবে। তবে এর পরিণতি ভয়াবহ’।
এই নতুন মরণনেশা হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবার মতোই তা তরুণসমাজকে ধ্বংস করবে। পশু-পাখিদের জন্য ব্যবহার করা এই ওষুধ তরুণ- তরুণীদের নেশা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশে। দীর্ঘমেয়াদি ক্যাটামিন ব্যবহারে দৃষ্টিভ্রম, কিডনি, যৌনক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, মানসিক সমস্যার ও লিভারের জটিল সমস্যাসহ অন্যান্য মাদকের মতোই তা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মাদক ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ক্যাটামিনের প্রভাব ভয়াভহ আকার ধারণ করবে।
এজন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করে এর ভয়াবহতা কিশোর-কিশোরী ও তরুণসমাজের সামনে তুলে ধরতে হবে। তবে সবার আগে আমাদের জনসচেতনতা দরকার।
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Development by: webnewsdesign.com