নবধারা নিউজ মানুষিক স্বাস্হ্য ডেস্ক

ভয়াবহ “ব্লু হোয়েল” কী এবং ব্লু হোয়েলে আসক্তদের চিনবেন কিভাবে?

রবিবার, ০৮ অক্টোবর ২০১৭ | ২:১১ অপরাহ্ণ | 940 বার

ভয়াবহ “ব্লু হোয়েল” কী এবং ব্লু হোয়েলে আসক্তদের চিনবেন কিভাবে?

ব্লু হোয়েল সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক একটি ডিপওয়ে গেম। যেসব কম বয়সী ছেলেমেয়ে অবসাদে ভোগে তারাই সাধারণত এতে আসক্ত হয়ে পড়েন। ভারতে ব্লু হোয়েলে আসক্ত হয়ে আত্মঘাতী কয়েক তরুণের সুইসাইডাল নোটে লেখা হয়েছে, ব্লু হোয়েলে ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না।

জানা যায়, ব্লু হোয়েল গেমে ৫০টি ধাপ রয়েছে। ৫০টি ধাপ ৫০ দিনে অতিক্রম করতে হয়। প্রথমদিকের ধাপগুলোতে সহজ কিছু থাকে। এর প্রতিটি ধাপ একাধিক কিউরেটর দ্বারা চালিত হয়। কিউরেটরদের নির্দেশ মতো গেমের এক একটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। গেমটির বিভিন্ন ধাপে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ব্লেড দিয়ে হাতে তিমির ছবি আঁকা, সারা গায়ে আঁচড় কেটে রক্তাক্ত করা, ভোরে একাকী ছাদের কার্নিশে ঘুরে বেড়ানো, রেললাইনে সময় কাটানো, ভয়ের সিনেমা দেখা ইত্যাদি। চ্যালেঞ্জ নেয়ার পর এসব ছবি কিউরেটরকে পাঠাতে হয়। ব্লু হোয়েলের ২৭তম দিনে হাত কেটে ব্লু হোয়েলের ছবি আঁকতে হয়। একবার এই গেম খেললে কিউরেটরের সব নির্দেশই মানা বাধ্যতামূলক। সব ধাপ পার হওয়ার পর ৫০তম চ্যালেঞ্জ হলো আত্মহত্যা। এই চ্যালেঞ্জ নিলে গেমের সমাপ্তি।

২০১৩ সালে রাশিয়ায় এই গেম তৈরি হয়। রাশিয়ায় শুরু হলেও এই গেমের শিকার এখন এশিয়ার অনেক দেশ। সাধারণভাবে গোপন গ্রুপের মধ্যে অপারেট করা হয় এ গেম। এক্ষেত্রে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মতো জনপ্রিয় স্যোশাল প্লাটফর্মকে কাজে লাগায় এডমিনরা। ২০১৬ সালে রাশিয়ায় ব্লু হোয়েল গেমের কিউরেটর সন্দেহে ফিলিপ বুদেকিন নামের ২২ বছরের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরায় ফিলিপ স্বীকার করে, এই চ্যালেঞ্জের যারা শিকার তারা এই সমাজে বেঁচে থাকার যোগ্য নয়। তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে আমি সমাজ সংস্কারকের কাজ করছি।

বাংলাদেশেও এই ভয়ংকর মরণনেশা ‘ব্লু হোয়েল’ গেমের ফাঁদে পড়ে অপূর্বা বর্মণ স্বর্ণা (১৩) আত্মহত্যা করেছে।
বাসায় নিজের পড়ার কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় নামে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার লাশের পার্শ্ব থেকে ব্লু হোয়েলের কিউরেটরের নির্দেশ মতো লিখে যাওয়া একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়। তাতে বড় করে লেখা, আমার আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়। লেখা শেষে গেমসের নির্দেশনা মতো একটি হাসির চিহ্ন আঁকা।

এরই মধ্যে নাকি বাংলাদেশে আমার মেয়েসহ অন্তত ৬১ জন ব্লু হোয়েলের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। ভারতে এই সংখ্যা ১৩০ বলে জানা গেছে। নিজ দেশ রাশিয়াতে এর শিকার হয়ে ১৮১ জন আত্মঘাতী হয়েছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ।

ব্লু হোয়েলে আসক্তদের চিনবেন কিভাবে?
যেসব কিশোর-কিশোরী ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে তারা সাধারণভাবে নিজেদের সব সময় লুকিয়ে রাখে। স্বাভাবিক আচরণ তাদের মধ্যে দেখা যায় না। দিনের বেশিরভাগ সময় তারা কাটিয়ে দেয় স্যোশাল মিডিয়ায়। থাকে চুপচাপ। কখনও আবার আলাপ জমায় অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে। গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় অনেককে। একটা সময়ের পর নিজের শরীরকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলতে থাকে তারা।

সবশেষ কথা-এই গেমে একবার ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না। তাই অনুরোধ কেউ যেন কৌতূহলের বশেও এই গেমসে না ঢোকে।

ফটো: সংগৃহীত

Comments

comments

সোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনিরবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Development by: webnewsdesign.com