মেক্সিকোয় দ্রুত বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ | 942 বার

মেক্সিকোয় দ্রুত বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা

মেক্সিকোতে ইসলামের দ্রুত প্রসার ঘটছে। ১৯৯৪ সালে মেক্সিকো সিটিতে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০ জন। তবে এখন অবস্থা বদলে যাচ্ছে। পিউ রিসার্চের গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১০ সালে মেক্সিকোতে মুসলামানদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার। ১৩ ফেব্রুয়ারি ডেনভার পোস্টে প্রকাশিত ঝড়সব গবীরপধহ ঈধঃযড়ষরপং হড়ি ভরহফ এড়ফ রহ ওংষধস অবলম্বনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো-
১৯৯৪ সালে মরক্কো থেকে মেক্সিকো সিটিতে এসেছিলেন সৈয়দ লুয়াহাবি। তখন এই শহরে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০ জন। এদের বেশিরভাগই ছিল কূটনীতিক ও ব্যবসায়িক। সে সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, তখন মেক্সিকোতে মুসলিম সম্প্রদায় ছিল খুবই ছোট। এদের বেশিরভাগই ছিল বিদেশি। মেক্সিকানরা ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানত না। সে সময়ে একটি মসজিদ খুঁজে পেতে তাকে হয়রান হতে হয়েছিল। লুয়াহাবি বলেন, ‘অনেক সময় ২-৩ মাসেও একজন মুসলমানের দেখা মিলত না।
তবে এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোতে মুসলমানদের জন্য তৈরি হয়েছে একটি ভিন্নতর পরিবেশ। মেক্সিকোতে মুসলমানের সংখ্যা অনেক। তাদের বেশিরভাগই মেক্সিকান। এখন প্রতি শুক্রবারই ইসলাম গ্রহণ করছেন মেক্সিকানরা। কোনো কোনো শুক্রবার ৫ জনও ইসলাম গ্রহণ করেন। লুয়াহাবি জানান, নবদীক্ষিতদের বেশিরভাগই নারী।
‘হোয়াই ইসলাম’ নামের একটি সংগঠনের ২০১২ সালের জরিপে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে মেক্সিকোতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ৩ হাজার লোক। এদের ১৯ শতাংশ ছিলেন ল্যাটিনো এবং অর্ধেকেরও বেশি নারী। ২০১১ সালের ৫২৪টি মসজিদের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, ২০০০ সাল থেকে নারীদের ইসলাম গ্রহণের হার ৮ শতাংশ বেড়েছে। দুই দশক আগে মেক্সিকোতে একটি মসজিদ খুঁজে পাওয়া ছিল দুষ্কর। তখন পাকিস্তানী দূতাবাসের মসজিদে অনেকে নামাজ পড়তেন। তবে এখন অবস্থা বদলে যাচ্ছে।
পিউ রিসার্চের গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৭০ সালে মেক্সিকোতে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৯৬.৭ শতাংশ। ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮২.৭ শতাংশে। এখন ক্যাথলিকদের একটি অংশ ইসলাম গ্রহণ করছেন। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় আরো বলা হয়, ২০১০ সালে মেক্সিকোতে মুসলামানদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার। তবে ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ২৬ হাজারে।
মেক্সিকোর খ্রিস্টানরা কেন ইসলাম গ্রহণ করছেন?
কেউ কেউ বলছেন, ক্যাথলিকদের ঈশ্বরের তিন রূপ মতবাদ, যাকে বলা হয় ‘দা ট্রিনিটি ডকট্রিন’ (পিতা, সন্তান ও পবিত্র সত্তা)-এর বিপরীতে ইসলামে এক আল্লাহতে বিশ্বাস অনেককে আকৃষ্ট করেছে। এছাড়া খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর সীমাহীন অভিযোগেও অনেক খ্রিস্টান বিরক্ত। তারা ইসলামে এর সমাধান পাচ্ছেন।
এদেরই একজন মার্থা আলামিলা, বয়স ২৩। তিনি একটি ক্যাথলিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। তিনি সব সময় উচ্চতর শক্তিতে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু গির্জায় এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তার সন্তোষজনক জবাব পাননি। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদে বসেই আলামিলা বলেন, ‘আমার মনে কোনো সংশয় ছিল না যে ঈশ্বর আছেন। কিন্তু আমার ধর্মের কাছে অনেক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে আমি অর্থপূর্ণ জবাব পাইনি। আমাকে বলা হতো- ঈশ্বর এভাবে বলেছেন তাই, ঈশ্বর এরকম… ইত্যাদি ইত্যাদি।’
এভাবে চলার পর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রিধারী আলামিলা এক সময় উন্নত জবাব খোঁজার চেষ্টা করেন। আলামিলা বলেন, ইসলাম সম্পর্কে তার প্রাথমিক ধারণা ছিল যে, এটি সন্ত্রাসবাদ ও নিপীড়নের ধর্ম। কিন্তু পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করার পর এবং মুসলমানদের সঙ্গে বৈঠকের পর তার ধারণা পাল্টে যায়। তিনি যেসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছিলেন তাও পেয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা একটা সুন্দর ধর্ম। এখানে প্রত্যেকটা জিনিসের অর্থ আছে। কুরআন ও হাদীসে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব আছে।’
প্রায় ছয় মাস ইসলামের ওপর অধ্যয়ন শেষে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)’ পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ করেন আলামিলা। তিনি আরো বলেন, ইসলাম সম্পর্কে তার সবচেয়ে সাধারণ যে ভুল ধারণাটি ছিল তা হলো এই ধর্ম নারীদের অধিকার হরণ করে, তাদের মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া হয় না এবং নারীদের হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু ইসলামের ওপর অধ্যয়ন শেষে তার এই ভুল ধারণা ভেঙে যায়। – See more at: http://www.dailyinqilab.com/2014/02/17/161554.php#sthash.IprVreit.dpuf

Comments

comments

সোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনিরবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Development by: webnewsdesign.com