কাজী জাফর আর নেই

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৫ | ১:৪৫ অপরাহ্ণ | 547 বার

কাজী জাফর আর নেই

কাজী জাফর আহমদজাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজেউন)। তিনি এইচ এম এরশাদের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সংসদ সদস্য ছিলেন। কাজী জাফরের একান্ত সহকারী গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, “হঠাৎ করে স্যার আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৭টার দিকে গুলশানের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাকে দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসক জানান, স্যার আর নেই।”

বহুবার দল ও মত বদলের কারণে আলোচিত প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা ছাড়াও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্রনেতা এবং পরে চীনপন্থী বাম নেতা হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিতি পাওয়া কাজী জাফর শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জিয়াউর রহমানের আমলে। পরে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের হাত ধরে তার সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. অনার্স ও এম.এ. (ইতিহাস) পাশ করেন।কাজী জাফর আহমদ ১৯৫৯-১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক উপদেষ্টা, ১৯৮৯-১৯৯০ সালে বাংলাদেশের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬-১৯৯৬ পর্যন্ত  পরপর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দীর্ঘ তিন দশক জাতীয় পার্টির সঙ্গে থাকার পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অন্তববর্তী সরকারে যোগদান নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর কাজী জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন এইচ এম এরশাদ।
এরপর দলের একাংশকে নিয়ে জাতীয় পার্টি নামেই নতুন দল গঠন করেন। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর  বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর গতবছরের ২৫ জানুয়ারি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেন।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজী জাফর আহমেদ জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।এরশাদের আমলে কাজী জাফর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

কাজী জাফরের মরদেহ গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তার স্ত্রী মমতাজ বেগম এবং দলীয় নেতাকর্মীরাও সেখানে আছেন।তাদের তিন মেয়ে কাজী জয়া আহমদ, কাজী সোনিয়া আহমদ ও কাজী রুনা আহমদের মধ্যে দুজন দেশের বাইরে থাকেন। তাদের মধ্যে সোনিয়া ইতোমধ্যে দেশে এসেছেন। আর রুনাও দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, শুক্রবার সকাল ৮টায় টঙ্গীর মিল গেইটে, বেলা ১২টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এবং জুমার পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে এই নেতার জানাজা হবে।

Comments

comments

সোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনিরবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০ 

২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Development by: webnewsdesign.com