সলোমন দ্বীপপুঞ্জে দাঙ্গার নেপথ্যে

শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ | ২:২৫ অপরাহ্ণ | 349 বার

সলোমন দ্বীপপুঞ্জে দাঙ্গার নেপথ্যে
সলোমন দ্বীপপুঞ্জের পার্লামেন্টের ফটকে বিক্ষুব্ধ লোকজন। ছবি: এএফপি

ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত সলোমন দ্বীপপুঞ্জে রাজনীতির একটা বদঅভ্যাস আছে। সেখানে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।

এই যেমন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২৪ এপ্রিল রাজধানী হনিয়ারায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এমন ঘটনা ১৩ বছর আগেও সেখানে ঘটেছিল।

এবারও পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষুব্ধ তরুণেরা ক্ষোভ ফেটে পড়েন। তাঁরা এমপিদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান।

বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে রাজধানীর চায়নাটাউন জেলায় যান। তাঁরা সেখানকার প্যাসেফিক ক্যাসিনো হোটেল ভাঙচুর করেন।

২০০৬ সালেও এমন ঘটনা ঘটেছিল।

এবার অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া পুলিশ যথেষ্ট প্রস্তুত ছিল। চায়নাটাউনে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশে বাধা দেয় দাঙ্গা পুলিশ। তারা বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের প্রস্তুতি ও তৎপরতা সত্ত্বেও ২৪ ও ২৫ এপ্রিল রাতে দাঙ্গা চলে। তবে এই দাঙ্গা রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। দাঙ্গাকারীরা দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করে।

মূলত ১০ম সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে এই অশান্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বাধীন শান্তিরক্ষী বাহিনী (রামসি) ২০১৭ সালে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ত্যাগ করে। রামসি চলে যাওয়ার পর সেখানে এই প্রথম সাধারণ নির্বাচন হয়।

নির্বাচন অনেকটা শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু মনাসসেহ সোগাভারে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়। তিনি ৫০ জন এমপির মধ্যে ৩৪ জনের সমর্থন পান। আর ১৫ জন এমপি সমর্থন করেন ম্যাথিউ ওয়েলকে। সোগাভারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার প্রতিবাদে এই ১৫ এমপি পার্লামেন্ট থেকে ওয়াকআউট করেন।

ওয়েলের দাবি, সোগাভারে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অযোগ্য। কারণ, আইন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হয়। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন বিলম্বিত করার পক্ষে আদালতের আদেশ পান ওয়েল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী গভর্নর জেনারেল এই আদেশ অগ্রাহ্য করেন। তিনি সংবিধানের দোহাই দেন। সে অনুযায়ী, কোনো এমপি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকুন বা না থাকুন, প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, আপাতদৃষ্টিতে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে দাঙ্গার কারণ রাজনীতি। তবে অন্তর্নিহিত কারণ—অর্থনীতি।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জে শান্তিরক্ষী বাহিনী (রামসি) অবস্থানকালে তারা বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে কাজ করেছেন। কিন্তু উন্নয়নের দিকটি উপেক্ষিত থেকেছে। এ ক্ষেত্রে খুব কমই কাজ হয়েছে। তা ছাড়া বিদেশি কোম্পানির দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়নি।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জে ব্যবসায় চীনা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য রয়েছে। অনেকের অভিযোগ, দুর্নীতির মাধ্যমে তাদের ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

সার্বিকভাবে সেখানে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, বৈষম্য, বেকারত্বের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে বিশেষ করে শহুরে তরুণেরা ক্ষুব্ধ। এই ক্ষোভই সম্প্রতি বিস্ফোরিত হয়ে দাঙ্গার রূপ নেয়।

সূত্র: প্রথম আলো

 

Comments

comments

সোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনিরবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Development by: webnewsdesign.com