রক্তদান করায় অনন্য নজির গড়েছেন আক্তারুজ্জামান।

শনিবার, ০৬ মে ২০১৭ | ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ | 1041 বার

রক্তদান করায় অনন্য নজির গড়েছেন আক্তারুজ্জামান।

নবধারা নিউজ। সিডনি শনিবার ০৬ মে ২০১৭ ইং
বেঁচে থাকার জন্য রক্তের প্রয়োজন। বাংলাদেশে যে পরিমাণ রক্তের চাহিদা, তা পূরণ হচ্ছে না। ফলে রক্তের ঘাটতির রয়েই যাচ্ছে। সুতরাং মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যেমন-রেডক্রিসেন্ট,সন্ধানী,কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে।

রক্তদান একটি মহৎ কাজ। আর এই মহৎ কাজের সাথে জড়িত আছেন আক্তারুজ্জামান আক্তার এগারো বৎসর যাবৎ। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে রক্তদান শুরু করেন এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে প্রথম রক্তদান ২০০৪ সালে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত মানে ২২ বছর ধরে চলছে এই রক্তদান কর্মচুচী। আক্তারের জন্মস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং বেড়ে উঠা ও পডাশুনা ঢাকাতে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। তিনি এ পর্যন্ত ৫০ বার রক্তদান করে এবার “কোয়ান্টাম প্লাটিনাম রক্তদাতা” হলেন। এর আগে আক্তারুজ্জামান “গোল্ডেন ক্লাব মেন্বার” হিসাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রদত্ত স্মারক সন্মাণনা-২০১৫ পেয়েছেন।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী আক্তার বলেন, “রক্ত দেয়ার পর মন খুব ভালো লাগে। কোয়ান্টামে নিয়মিত রক্ত দিচ্ছি এবং যতদিন বেঁচে আছি ততদিন মানুষের সেবায় রক্ত দিতে যাব। স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য প্রয়োজন মানবিকতা, মানুষের জন্য ভালোবাসা”।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর নিরাপদ রক্ত পাওয়া যায় সবমিলে তিন লাখের মতো। এর মধ্যে কোয়ান্টাম গড়ে প্রতি বছর সংগ্রহ করতে পারে এক লাখ ব্যাগ। আর রেড ক্রিসেন্ট ও সন্ধানী মিলে আরও দেড় লাখ ব্যাগ দিতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, আমাদের দেশে প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকেই মারা যান, বেশির ভাগই রক্তক্ষরণজনিত কারণে। রক্ত সঠিক সময়ে সংগ্রহ করে পরিসঞ্চালন করা গেলে অনেক জীবনই বাঁচানো সম্ভব। এ প্রাণগুলো অকালে ঝরে যাওয়া রোধ করতে প্রয়োজন আমাদের একটু সহানুভূতি, সচেতনতা। আমাদের এক ব্যাগ রক্তই পারে এদের জীবন বাঁচাতে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে রক্তদানের হার খুবই কম। তবে এসব দেশে আবার রক্তের চাহিদা বেশি। তাই এসব দেশে চাহিদার তুলনার সরবরাহ সব সময় কম থাকে। রক্ত যেহেতু পরীক্ষাগারে তৈরি করা যায় না, তাই এর চাহিদা পূরণ হতে পারে কেবল রক্তদানের মাধ্যমে। ৫০ থেকে ৫৫ হাজার রোগী রক্তের অভাবে মারা যান। চিকিৎসকরা বলেন, সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত রক্ত দিতে পারবেন।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের রক্ত সংগ্রহ কর্মসূচির সমন্বয়ক শেখ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, বাণিজ্যিভাবে সংগ্রহ করা রক্ত নিরাপদ কি না তা বলা কঠিন। কারণ ওই জায়গায় যারা রক্ত বিক্রি করেন তারা মাদকাসক্ত। তাদের রক্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেশাদার রক্তদাতার সমস্যা হলো- এদের বেশির ভাগই মাদকসেবী। মাদকসেবীদের রক্ত গ্রহণ করা বিপজ্জনক। এদের রক্তে থাকে হেপাটাইটিস, এইডস, সিফিলিসের জীবাণু। এদের রক্ত দেয়ার পর রোগী প্রাণে বাঁচলেও পরে যে মারাত্মক রোগে ভোগেন, তা রোধের উপায় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন। এখন আমাদের দেশেও রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ছে। তবে এখনো তা পর্যাপ্ত নয়। এখনো রক্তের জন্য পেশাদার রক্তদাতার ওপর নির্ভর করতে হয়।

উল্লেখ্য যে,কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছায় রক্তদানকে ৩টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। নিন্মে তা তুলে ধরা হলো।
প্লাটিনাম ক্লাব মেন্বার ৫০ বার রক্তদান করলে
গোল্ডেন ক্লাব মেন্বার ২৫ বার রক্তদান করলে
সিলভার ক্লাব মেন্বার ১০ বার রক্তদান করলে

উল্লেখ্য যে,
আক্তারুজ্জামান আক্তারের মোট রক্ত দান ৫০ ব্যাগ (রেডক্রিসেন্টে ১০বার+সন্ধানীতে ২বার+কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে ৩৩বার+সরাসরি রোগীকে প্রদান ৫বার)
রক্তদাতাদের প্রতিদান দেয়াও কখনোই সম্ভব নয়।

Comments

comments

সোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনিরবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Development by: webnewsdesign.com