আজকাল বড় বড় শহর, গঞ্জ, হাট-বাজারগুলোতেও কয়েক ধরনের পিঠার বেশ প্রচলন দেখা যায়, বিশেষ করে চিতই পিঠা, ভাপাপিঠা, তেলের ডুবাপিঠা। রাস্তার ধারে গরিব নারী-পুরুষ এ পিঠা তৈরি করে বিক্রি করে। বেশ ভালোই চলে পিঠার ব্যবসা। গরিব, ধনী, ছাত্র-ছাত্রী, রিক্সাওয়ালা অনেকেই এসব পিঠা সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার বা বিকালের নাস্তা হিসেবে খেতে পছন্দ করে। ভাপা পিঠাতে গুড়, নারকেল আর চিতই পিঠাতে সহযোগ হিসেবে ধনেপাতার চাট্নি বা শুঁটকির ভর্তা বা গুঁড়ের টুকরা দেওয়া হয়। পিঠা ফেরি করে এতে বহু গরিব লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে পিঠা বিক্রয়ের আয় দিয়েই চলেছে তাদের ঘর-সংসার। এতে আরেকটি লাভও হচ্ছে। বিদেশি ফাস্ট ফুডের দিকে যতটা ঝোঁক ছিল সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে, সে ঝোঁকটি এখন পিঠার দিকে গেছে।
পিঠার কদর অভিজাত শহরবাসীদের মধ্যেও আছে। পিঠাঘরসহ বেশকিছু হোটেল, দোকানে পিঠা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। অনেক ধনীব্যক্তি, ছাত্র-ছাত্রীরাও এসব দোকানে পিঠা খেয়ে রসনা তৃপ্ত করে। প্রতি বছরই ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে পিঠা মেলা বসে। বিভিন্ন ক্লাব, এনজিও এসব পিঠামেলার আয়োজন করে।
এসব মেলায় লোকের ভিড় থাকে প্রচুর। নক্সিপিঠা, ঝুরিপিঠা, নারকেলের লাড্ডু, বরফীপিঠা বিদেশেও যায়। তা অবশ্য বাণিজ্যিকভিত্তিতে নয়। আমাদের দেশের নানারকম পিঠা যা কয়েক মাস সংরক্ষণ করা যায় সেসব পিঠা বাজারজাত করাসহ যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা যায়, তবে তা থেকে আমরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতে পারি।
আমাদের দেশের মেলাগুলোতে পিঠার উৎসবে অনেক সময় বিদেশিদের দেখা যায় মজা করে পিঠা খেতে। নক্সা করা পিঠার বাহারি ডিজাইন দেখে তারা অবাক হয়। কি করে বাংলাদেশের গ্রামের গরিব নারীরা এত সুন্দর নক্সা করতে পারে। সুস্বাদু পিঠাপুলি তৈরি করতে পারে? বহু প্রশ্ন করে তারা এ নিয়ে। মর্ডানাইজেশন ও ম্যাকানাইজেশন তাদেরকে এমনই এক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে যে, হোটেল বা রেস্টুরেন্ট আর বার ক্লাবের খাবার খেয়ে এদের অধিকাংশের জীবন কাটে। সেদিক থেকে আমরা এখনো অনেক সৌভাগ্যশালী। এখনো বাংলাদেশের সন্তানেরা তাদের মায়ের হাতের হরেক রকম রান্না, পিঠাপুলি খেতে পারে। পিঠাপুলি আমাদের বিরাট ঐতিহ্য ও নারীর শিল্পী সত্ত্বার পরিচয় বহন করে। দেশ বিদেশে পিঠা শিল্পের বাণিজ্যিকিকরণ দরকার। তা হলে দেশের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক দরিদ্র বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের মধ্যদিয়ে তাদের জীবন মানেরও উন্নতি ঘটবে নিঃসন্দেহে।
ফোরকান বেগম
লেখক, গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধা
৬১/জি আজিমপুর এস্টেট
ঢাকা-১২০৫
সুত্র: http://www.dailyinqilab.com/2014/02/04/158152.php#sthash.w4nqDTgT.dpuf
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ |
২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Development by: webnewsdesign.com