আজ ২৫ মার্চ। মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক নৃশংস, ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় কালরাত্রি। গভীর রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হলো নরঘাতক পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ছড়িয়ে পড়ল শহরময়। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠল অত্যাধুনিক রাইফেল, মেশিনগান ও মর্টার। হতচকিত বাঙালি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়ল মৃত্যুর কোলে। শহরে সেদিন চারদিকে শুধু রক্ত আর সারি সারি অসংখ্য শহীদের লাশ।
এর আগের রাতে ইয়াহিয়া খান গোপনে বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙালিদের ওপর কাপুরুষিত সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে। এদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা শহরজুড়ে যখন হত্যার উৎসব মেতে উঠেছে তখন বিদেশি সাংবাদিকরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করছিলেন।
পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী প্রথমেই রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও পিলখানায় ইপিআরের সদস্যদের নিরস্ত্র করতে সেখানে হত্যাযজ্ঞ চালায়। রাজারবাগে সে রাতে ১১০০ বাঙালি পুলিশের রক্ত ঝরানোর পাশাপাশি গুঁড়িয়ে দেয় পুরো ব্যারাক, জ্বালিয়ে দেয় সবকিছু।
এরপর ট্যাঙ্কের নল উঁচিয়ে তারা এগোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে প্রথম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে তারা। পাখির মতো গুলি করে মারে তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে। নির্মমভাবে হত্যা করে ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষককে। গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ হলেরই ১০৩ ছাত্রকে। অগ্নিসংসোগ করে ইকবাল হলে। সে রাতে সম্ভ্রম বাঁচাতে রোকেয়া হলের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহনন করে ৫০ ছাত্রী।
নরপশুরা হামলা চালায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশ, ধানমন্ডি, শাঁখারী বাজারস গোটা ঢাকায়। রাত দেড়টায় ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বঙ্গবন্ধুকে। এর আগেই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়্যারলেস-বার্তায় তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার জনগণকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি ৯ মাস যুদ্ধ করে ৩০ লাখ শহীদ ও প্রায় ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জন করে স্বাধীনতা।
এরাতেই সূচিত হয়েছিল জঘন্যতম গণহত্যার, যা ন’মাসে স্বাধীনতার জন্য মূল্য দিতে হয়েছিল ৩০ লাখ মানুষকে। স্বাধীনতার জন্য সম্ব্রম হারাতে হয়েছিল অসংখ্য মা-বোনকে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল তাদের এদেশীয় দোসর ঘাতক দালাল রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
২০১৭ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। নবধারা নিউজ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Development by: webnewsdesign.com